অনলাইন নিরাপত্তাঃ সাইবার অপরাধীদের থেকে নিজের ব্যক্তিগত তথ্য ও ডিভাইস রক্ষা করে নিরাপদে ইন্টারনেট ব্যবহারের কৌশলই মূলত অনলাইন নিরাপত্তা।যদিও সাইবার নিরাপত্তা ডিভাইস এবং নেটওয়ার্কগুলিকে তৃতীয় পক্ষের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে ,অনলাইন নিরাপত্তা সচেতনতা, শিক্ষা, তথ্য এবং প্রযুক্তির মাধ্যমে ডিভাইস এবং নেটওয়ার্ক (এবং তৃতীয় পক্ষের) দ্বারা তাদের ব্যবহার করা ক্ষতি থেকে রক্ষা করে।ইন্টারনেটের মাধ্যমে কার্যকলাপে জড়িত থাকার সময় আপনি যে সম্ভাব্য হুমকির সম্মুখীন হতে পারেন সে সম্পর্কে অনলাইন নিরাপত্তা সচেতন। এগুলি হতে পারে নিরাপত্তার হুমকি, আপনার ব্যক্তিগত ডেটা সুরক্ষা এবং পরিচালনা, অনলাইন খ্যাতি পরিচালনা এবং ক্ষতিকারক বা অবৈধ সামগ্রী এড়ানো।
অনলাইন ঝুঁকি ব্যবস্থাপনাঃ ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত হওয়া লোকের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে, যেমন অনলাইন স্পেসে শিশুদের – এবং প্রকৃতপক্ষে আমাদের সকলের – চ্যালেঞ্জগুলিকে চিনতে হবে৷অনলাইন নিরাপত্তা অনুশীলনের মাধ্যমে , আমরা ডিজিটাল প্রযুক্তি, প্ল্যাটফর্ম এবং পরিষেবাগুলি ব্যবহার করার সাথে অন্তর্নিহিতভাবে জড়িত ঝুঁকিগুলি প্রতিরোধ এবং প্রশমিত করতে পারি।একবার ঝুঁকিগুলি পরিচালনা করা হলে, ইন্টারনেট ক্ষতিমুক্ত এবং প্রচুর উপকারের জন্য উপভোগ করা যেতে পারে।
মেধা অ্যাপ ব্যবহার করতে অনলাইনে নিরাপদ থাকার ১০ টি পদ্ধতিঃ
১. নিরাপদ ইন্টারনেট সংযোগঃ
অনলাইনে নিরাপদ থাকতে হলে প্রথমেই প্রয়োজন নিরাপদ ইন্টারনেট সংযোগ। কিন্তু এ বিষয় সম্পর্কে অনেকেই সচেতন নন। আর তাই বেশির ভাগ মানুষই সাইবার ক্যাফে, রেস্তোরাঁ, বিমানবন্দর বা রেলস্টেশনে থাকা গণ বা পাবলিক ওয়াই-ফাই সংযোগ ব্যবহার করেন। প্রয়োজনেও এটি করতে হয়। অনেক সময় পাবলিক ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্কের নিরাপত্তা তেমন শক্তিশালী থাকে না। ফলে ব্যবহারকারীর ই-মেইল, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্ট আইডি ও পাসওয়ার্ড, ব্যাংক অ্যাকাউন্টসহ ব্যক্তিগত তথ্য চুরির আশঙ্কা থাকে। আর তাই পাবলিক ওয়াই-ফাই বা সাইবার ক্যাফেতে ইন্টারনেট ব্যবহারের সময় অবশ্যই ভার্চ্যুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক বা ভিপিএন ব্যবহার করতে হবে। ভিপিএনে ব্যবহারকারীদের তথ্যে কোড যুক্ত বা এনক্রিপ্ট করে বিনিময় হওয়ায় সহজে সেগুলো সংগ্রহ করতে পারে না সাইবার অপরাধীরা।
২. শক্তিশালী পাসওয়ার্ডঃ
অনলাইনে নিরাপদ থাকতে ই-মেইল, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্টগুলোতে অবশ্যই শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে। অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা জোরদার করতে কমপক্ষে ছয় অক্ষরের পাসওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে। পাসওয়ার্ড যত বড় হবে, ততই নিরাপদ। তবে নিজের প্রিয়জন বা পছন্দের জীবজন্তু বা বস্তুর নামের সমন্বয়ে পাসওয়ার্ড দেওয়া যাবে না। পাসওয়ার্ডে অবশ্যই ছোট-বড় অক্ষরের পাশাপাশি একাধিক সংখ্যা ও চিহ্ন ব্যবহার করতে হবে। শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহারের পাশাপাশি অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তায় অবশ্যই দুই স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা (টু ফ্যাক্টর অথেন্টিফিকেশন) ব্যবহার করা উচিত।
৩. হালনাগাদ অপারেটিং সিস্টেম, ব্রাউজার এবং সফটওয়্যার ব্যবহার :
অনলাইনে নিরাপদ থাকতে কম্পিউটার এবং মুঠোফোনে হালনাগাদ অপারেটিং সিস্টেম, ব্রাউজার এবং সফটওয়্যার ব্যবহার করতে হবে। শুনতে অবাক লাগলেও ঘটনা কিন্তু সত্যি। কারণ, হালনাগাদ অপারেটিং সিস্টেম, ব্রাউজার এবং সফটওয়্যারের নিরাপত্তাব্যবস্থা বেশ শক্তিশালী থাকে। ফলে ইন্টারনেট ব্যবহারের সময় সাইবার হামলার আশঙ্কা থাকলে ব্যবহারকারীদের সতর্ক করার পাশাপাশি হামলা প্রতিরোধেও ভূমিকা রাখে।
৪. তথ্য বিনিময়ে সতর্কতা ও সংরক্ষণঃ
আমরা অনেকেই বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ সাইট বা মেসেজিং সেবায় ব্যক্তিগত বা প্রতিষ্ঠানের ছবি বা তথ্য দিয়ে থাকি। এতে পরিচিতদের পাশাপাশি অপরিচিতরাও বিভিন্ন ব্যক্তিগত তথ্য জেনে যান। ফলে সাইবার অপরাধীরা চাইলেই ছবি বা তথ্যগুলো কাজে লাগিয়ে সাইবার হামলা চালাতে পারে। আবার অ্যাকাউন্ট বেহাত হলে সব তথ্য এবং ছবিগুলো সাইবার অপরাধীদের দখলে চলে যেতে পারে। আর তাই নিরাপদ থাকতে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নষ্ট করতে পারে, এমন কোনো তথ্য ও ছবি অনলাইনে বিনিময় না করাই ভালো। এর পাশাপাশি কম্পিউটার এবং মুঠোফোনে থাকা তথ্য পেনড্রাইভ, আলাদা হার্ডডিস্ক, ক্লাউড বা অন্য কোনো মাধ্যমে সংরক্ষণ করা উচিত। এর ফলে সাইবার হামলার শিকার হলেও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিরাপদে থাকবে।
৫. ফিশিং লিংকে ক্লিক না করাঃ
ব্যবহারকারীদের বোকা বানাতে বিভিন্ন প্রলোভন ও সুবিধা দেওয়ার নাম করে ই-মেইল এবং সামাজিক যোগাযোগ সাইটে বার্তা পাঠিয়ে থাকে সাইবার অপরাধীরা, যা ফিশিং আক্রমণ নামে পরিচিত। ফিশিং আক্রমণের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে তারা। আর তাই অপরিচিত কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান থেকে পাঠানো ই-মেইলে থাকা লিংকে ক্লিক করা থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ, লিংকগুলোতে ক্লিক করলেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে ক্ষতিকর ম্যালওয়্যার কম্পিউটার ও মুঠোফোনে প্রবেশ করে ব্যবহারকারীদের তথ্য ও অর্থ চুরি করতে পারে। আর তাই ই-মেইল বা ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের সাইটে বিনিময় করা কোনো লিংকে ক্লিক করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
৬. ভিপিএন ব্যবহার করাঃ
অনলাইনে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম আপনার ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নিতে পারে। এসব ডেটা বা তথ্য অন্য কোম্পানির কাছে বিক্রি করে দেয়। তবে ভিপিএন ব্যবহার করলে তথ্য চুরি করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। পাবলিক ওয়াই-ফাই ব্যবহারের মাধ্যমেও ব্যবহারকারীর পাসওয়ার্ড, লগ-ইন ক্রেডেনশিয়ালস, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বিবরণ, ক্রেডিট কার্ডের তথ্য এবং ব্যক্তিগত সংবেদনশীল তথ্য হ্যাকারদের কাছে চলে যেতে পারে। ভিপিএন ব্যবহারের মাধ্যমে এসব ক্ষেত্রে একটি অতিরিক্ত সুরক্ষা পাওয়া যায়। ভিপিএন ব্যবহারকারীর আইপি অ্যাড্রেস ও ভৌগোলিক অবস্থান গোপন রাখে। ফলে বিভিন্ন ওয়েবসাইট, বিজ্ঞাপনদাতা ও অনলাইন ট্র্যাকারের কাছে ভিপিএন ব্যবহারকারীর পরিচয় গোপন থাকে।বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম দেশভিত্তিক বিশেষ টিভি সিরিজ, মুভির মতো কনটেন্ট থাকে। যেগুলো অন্য দেশ থেকে দেখা যায় না। ভিপিএন ব্যবহার করলে নিজের ডিভাইসের লোকেশন বা ভৌগোলিক অবস্থান পরিবর্তন করা যায়, ফলে সেই দেশের বিশেষ বিশেষ কনটেন্টগুলো উপভোগ করা যায়। এ ছাড়া কোনো দেশের সরকার বা আইএসপি কিছুনির্দিষ্ট ওয়েবসাইট ব্লক করে রাখতে পারে। ভিপিএন ব্যবহার করার মাধ্যমে সেসব ওয়েবসাইটেও প্রবেশ করা যায়। ভিপিএন ব্যবহার এর ক্ষেত্রে Enova VPN হতে পারে আমাদের মেধা অ্যাপ ইউজার দের জন্য প্রথম পছন্দ। Enova VPN ব্যবহার এর নিয়ম অতি সহজ এবং মেধা অ্যাপ ইউজার রা এই অ্যাপ টি ৪৫% ডিস্কাউন্ট এ নাম মাত্র মূল্যে ব্যবহার করতে পারবে। ভিপিএন টি Enova VPN ইউজার রা ব্যবহার করতে সক্ষম হবে যে কোনো অনলাইনগত ঝামেলা ছাড়াই।Enova VPN টি অত্যান্ত আধুনিক এবং ইউজার ফ্রেন্ডলি।
৭. ডাউনলোডে সতর্কতাঃ
অনেকেই অনলাইনে বিভিন্ন ওয়েবসাইট বা স্টোর থেকে অপরিচিত প্রতিষ্ঠানের তৈরি অ্যাপ বা সফটওয়্যার ডাউনলোড করে ব্যবহার করেন। কিন্তু এর মাধ্যমে মুঠোফোন বা কম্পিউটারে ম্যালওয়্যার প্রবেশ করিয়ে সাইবার হামলা চালাতে পারে সাইবার অপরাধীরা। আর তাই অ্যাপ বা সফটওয়্যার ডাউনলোড করার সময় সতর্ক থাকতে হবে। অপরিচিত ও অবৈধ উৎস থেকে অ্যাপ ডাউনলোড করা যাবে না। একই সঙ্গে প্রয়োজন ছাড়া মুঠোফোন বা কম্পিউটারের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ব্যবহারের অনুমতি নেওয়া অ্যাপ বা সফটওয়্যার ডাউনলোড করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
৮. অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার:
অনলাইনে নিরাপদ থাকার জন্য অ্যান্টিভাইরাস বেশ গুরুত্বপূর্ণ। অনলাইনে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের তৈরি বিনা মূল্যের অ্যাপ পাওয়া যায়। তবে টাকার বিনিময়ে অ্যান্টিভাইরাস কিনে ব্যবহার করলে বাড়তি সুবিধা পাওয়া যাবে। ফলে অনলাইনে নিরাপদ থাকার সম্ভাবনা বাড়বে।
৯. তথ্য ব্যাকআপ রাখা:
তথ্য প্রযুক্তিতে , ডেটা ব্যাকআপ হল কম্পিউটার ডেটার একটি অনুলিপি যা নেওয়া এবং অন্য কোথাও সংরক্ষণ করা হয় যাতে এই ডাটা গুলো হারানোর ভয় না থাকে। ডেটা হারানোর ঘটনা ঘটলে পরে ব্যকআপ এ রাখা তথ্য বা ডেটা পুনরুদ্ধার করতে ব্যবহার করা যেতে পারে।
১০. ভুয়া ইমেইল এড়িয়ে চলাঃ
ভুয়া বা ফেইক ইমেইল এড়িয়ে চলা উত্তম কারণ এগুলো ফিশিং করে আপনার ব্যাক্তিগত তথ্য চুরি করতে পারে।
এই সাইবার নিরাপত্তা গুলো ব্যবহার করে আমরা আমাদের মেধা অ্যাপ টি ঝুঁকি মুক্ত ভাবে ব্যবহার করতে পারি।যার মাধ্যমে আমাদের অ্যাপ ব্যবহার হবে অতি সহজ ও সাবলিল।